ব্যঞ্জন বর্ণের ছড়া

কুয়াশার চাদরে

গাছপালা ঢাকা,

দূরের গ্রামগুলো

যায় না তো দেখা।

এঁকে বেঁকে বয়ে চলে জল পথ

মাঝিরা নীরব আছে

নাওয়ে ভরা তট

পথ হারায় পথিকেরা

কুয়াশার বাঁধে

মাঝিরা আটকা পড়ে

কুয়াশার ফাঁদে।

কালো কুকিলে কয়

গাছের মগ ঢালে বয়

শুনে গাঁয়ের বন্ধু

কোকিলে ডাকে শুধু

কু-উ, কু-উ কু-উ।

খোলা খাবার খাবে যদি

দেখে শুনে খাবে

পথের ধারে খাবার দোকান

ঢাকা থাকে তবে।

খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে নাও

এমনিভাবে রোজ বুঝ্

পেটের পীড়া হবে না তো

সুস্থ থাকবে রোজ।

গোয়াল ভরা গরু ছিলো

গাঁ-গ্রামের মাঝে

মা-চাচারা করতো আলাপ

উঠানে সন্ধ্যাকালে।

ঘোড়ায় চড়ে যাবো আমি

সবার ঘরে ঘরে

কেউ নি আছে খোঁজ নিতে

অবহেলায় মরে।

ব্যাঙ বেঁধেছে ব্যাঙের বাসা

ব্যাঙের ছাতা কয়,

ক, খ, গ, ঘ, ঙ

এমনি শেখা হয়।

চল্ চল্

সরল পথে চল্

সরল পথে চলতে গিয়ে

সকল বাধা পেরিয়ে চল্।

চল্ চল্।

ছাগল ছানা, ছাগল ছানা

ছোটন খোকা ধরতে মানা,

ছাগল ছানা ধরতে গেলে ‘মা’ ছাগলটি করে হানা।

জলের উপর জল নাচে

জল উড়ে যায়

জলের গায়ে জল লেগে

বিজলীতে আলো ছড়ায়।

ঝুমুর ঝুমুর নুপুর পরে

আলতা রাঙা পায়,

ঝন্র ঝন্র কাঁকন হাতে_

বেদে কন্যা যায়।

মিঞো মিঞো বিড়াল ডাকে

মিঞা বাড়ি যায়,

মিঞা বাড়ির ইঁদুরের দল

ভয়ে-তে পালায়।

টগর ফুল টগর ফুল

টগর ফুল কোটলরে

টগর ফুলের গন্ধ পেয়ে

প্রজাপতি ছোট লরে।

টিয়া পাখির ঠোটটি লাল

বসে গাছের মগ ঢাল

খুকু মণি রাগ করছে

ভাত খায়নি গতকাল।

ঠেলা দিয়ে বোঝা টানে

কুলি মুটে মুজুর

টপটপিয়ে ঘাস ঝরছে

দেখ তপ্ত দুপুর।

অধিক খাটায় দেখ তাদের

হাড়গুলো যায় গোনা

আরামে কেউ জীবন কাটায়

তাদের জীবন ফানা।

ডাকে পাখি ভোর বেলা

ঘুমাইও না আর

জেগে উঠো আলসে ঝেড়ে

কাজ করো যার যার

ঢোলের তালে তালে

নেচে গায় গান

মোহনীয় বাশির সুরে

ভরে যায় প্রাণ।

নদীর কূলে বাস করে যে

ভরসা নাই তার

গভীর বনে বাস করে

হয় বাঘের আহার।

পদ্ম মূল জলের তলে

পাচায় লাগে ঢেউ

ফুলের বোটায় কাঁটা আছে

ভুলিও না কেউ।

তা-তা, থই থই, না না

দুধ ছাড়া দই হয় না

ঘরে রাখা পাতা দই

অসময়ে খুলো না।

থাকতে সময় ঘরে ফিরো

দুষ্ট ছেলের দল

কম আলোতে খেলতে গিয়ে

হারিয়ে যাবে বল।

দল বেঁধে চলে দেখ

পিপিলিকার দল,

ঝগড়া করবে না

একতাই বল।

ধমকানীতে শাসন হয় না

শোধরে দিতে হয়।

অধিক শাসন করতে গেলে

আছে অনেক ভয়।

বলতে হবে বারে বারে

মায়া মমতা নিয়ে

ধারণ করবে অনায়াসে

শিখবে মন দিয়ে।

নামের মানুষ অনেক আছে

গুণের মানুষ নাই

কথায় পাঁকা অনেক আছে

সত্য বলার চাই।

অধিক কথার মিথ্যা শুনার

অনেক আছে ভাই।

মিষ্টিভাষি অল্প শুনার মানুষ কোথায় পাই।

ফুলে ফুলে অলি উড়ে

মৌ ভ্রমরের মেলা

মানুষ সবাই তাই ভাবিয়া

যাবে না নিয়ম ভুলা।

বাতাস বহে গরম কালে

গা জুড়ি নেই,

শীতের কালে বহে বাতাস

গরম পোশাক নেই।

আমার আছে আমি পড়ি

গরিব দুঃখির নেই,

অধিক পোশাক থাকলে তবে

পথ শিশুদের দেই।

ভয় কেন তারে

সে-তো ভয়ের পাত্র নয়,

পথ ভোলারে পথ দেখাতে

ভরের কথা কয়।

ভোরের আলো উঠলো ফোটে

পাখিরা গান গায়

আজান দিতে মুয়াজ্জিনে

মসজিদে যায়।

শিশুরা সব আগে উঠে

মক্তবে যায়,

মা-বোনেরা কলসি কাঁধে

জলকে চলে যায়।

বাপ-ভাইয়েরা নানা কাজে

উঠেই পরে লাগে

মাঠ ফসলের বুননের কাজ

করবে কে কার আগে।

মধু নিতে মৌমাছি

ঘুরে ফুলে ফুলে

ফুল ফুরালে মৌমাছি

অন্য ফুলে চলে।

যখন তখন বায়না ধরে

মায়ের কাছে যায়,

যা চায় তা না পেয়ে

অাঁচলে মুখ লুকায়।

যায় বেলা যায়

খোকন এবার আয়

ওপারে যাবো মোরা

খেয়া খাটের নাম।

রাতের আকাশে চাঁদের আলো

মেঘেরা আছে ঘুমে

জোনাকির দল উড়ছে যেন

আচ্ছা ভূমি চুমো।

রাগ করোনো খোকন সোনা

বাজারে যাবো কাল

বল, বেট, গ্লাপস দেবো

ফুলিও না গাল।

লোকে লোকে ভরে যায়

গাঁয়ে বসলে হাঁট,

বাবার সাথে বেচতে যাবো

নৌকা বোঝাই পাট।

বলছে বাবা কিনে দেবে

আমায় নূতন শার্ট

দাদা-দাদুর জন্যে কিনবো

নয়া কাঠের খাট।

তারা আমায় যতন করে

রাখতো কোলে তুলে।

অনেকের দাদা-দাদু আছে

অবহেলায় যায় মরে।

শীতের পোশাক কিনে দেবো,

পরতে তারা হাতে,

অনেক দোয়া করতে তারা

খুশি হবে তাতে।

অসুখ হলে খোঁজ নেবো

পথ্য দেবো কিনে,

কেউ না কেউ থাকবো পাশে

রাতে কিংবা দিনে।

মা-বাবা পেয়েছি আমরা

তাদের পরম দানে

ওদের সেবা না করলে

শোধব ঋণ কিসে ঋণে।

আমরা ওরা সবার ওরা

রাখলে তাদের খোঁজ

প্রভুর আশিস পাবো মোরা

মনে রেখো রোজ।

টুপুর টাপুর বৃষ্টি পড়ে

স্কুলে যাই তবু

বর্ষাকালে ছাতা নিতে

ভুলবো না-তো কভু।

আষাঢ় এলে অঝোর ধারায়

বৃষ্টি নামে যেই,

চাল, কলাই, মুগ ভাজতে

মাকে বলে দেই।

কুড় কুড়িয়ে মুড় মুড়িয়ে

সব মিলিয়ে খাই।

চালে পড়া বৃষ্টির আওয়াজ

শুনতে নাহি পাই।

এতো গেলা গাঁয়ের কথা

গাঁয়ে থাকি ভাই

বলতে পার এমন আষাঢ়

আর কোথায় পাই?

সুন্দর সকাল

আলো ঝলমল,

সবুজ ঘাসে

জল টলমল।

সুখের আসন

করিয়া বিকল

বিন্দু জলের

জীবন বিফল।

মুক্তোর হাসি

হেসে যারা

আনন্দের মাতিয়ে

রাখে তারা

নিভু আলোতে

বিকেল বেলা,

আবার আসে

খেলতে খেলা।

হয় যদি পথ চলা

চলে আর লাভ কি?

আশপাশে আছে দেখে

বল তার নাম কি?

চালক ছাড়া চলে

বল কিছু আছে কী?

তবুও চালক আছে

তাঁর কথা জান কী?

ভাবিয়া পাইলে সব

তবে কেন কলরব?

তাঁহারি হাতে সব

চিনকি তোমার রব?

হলুদ সাজে হলদে পাখি

হলুদ রঙে সূর্যমুখি।

হাত রার্ভাতে মেহদী মাখি

তাই তো মনি হাসি মুখি।

ড শূন্য নাম পড়ি

সে তো অনেক কারবারি

শূন্য ছড়া যখন পড়ি

নতুন নামের ছড়া ছড়ি।

ঢ শূন্য নাম তার

প্রজা ছাড়া রাজ্য কার

শূন্যটারে না দিলে

প-িত মশাই করে চিৎকার।

ময়না টিয়া কোয়েল শ্যামা

কত শত পাখি আছে

কাকাতুয়া পায়রা ঘুঘু

যে যার মতো নাচে।

Leave a comment